রাজশাহী নগরীর কাটাখালি থানাধীন সাহাপুর এলাকায় আসমা খাতুন সম্পা (৩২) নামে এক সন্তানের জননীকে মারপিট করে হত্যার পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের চালার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই গৃহবধূর স্বামী মোতালেব হোসেনের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে কাটাখালি থানা পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনার পর গৃহবধূর স্বামী পলাতক রয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কাটাখালি থানাধীন সাহাপুর এলাকার আবু সামাদের ছেলে মোতালেব হোসেনের সঙ্গে মতিহার থানাধীন ধরমপুর এলাকার মাজদার রহমানের কন্যা সম্পার সাথে বিবাহ সুম্পন্ন হয়। বিয়ের পর তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও ঝগড়া লেগেই থাকতো। মাঝে-মধ্যেই সম্পাকে মারপিট ও নির্যাতন করতেন বলে জানা যায়।
এর জের ধরে বুধবার স্বামী মোতালেন তার স্ত্রী সম্পাকে হত্যা করে বাড়ির চালার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া চেষ্টা করেন।
মৃত গৃহবধূর ভাই রনি মঙ্গলবার (২৫ জুন) সাংবাদিকদের বলেন, আমার বোনকে মেরে ফেলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। গত মঙ্গলবার (১৮ জুন) আমাদের বাসা থেকে সুস্থ অবস্থায় তার স্বামির কাছে আসে এবং পরদিন (১৯ জুন) দুপুরে আমরা তার মৃত্যুর সংবাদ পায়। আমার বোনের পুরো শরীরে নির্যাতনের দাগ আছে। যা পুলিশ প্রাথমিকভাবে সুরতহাল করার সময় দেখেছে। সে সময় মোতালেব পলাতক থাকলেও বর্তমানে মোতালেব প্রকাশ্যে ঘুরে বেরালেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা একাধিকবার থানায় মামলা করতে গেলেও বিভিন্ন অজুহাতে আমাদেরকে ঘুরাচ্ছে থানা পুলিশ। আমার বোনের মৃত্যুর ঘটনার আগেও নির্যাতনের অভিযোগ দিতে গেলে সেই অভিযোগও নেয়নি থানা পুলিশ। পূর্বেই এই অভিযোগ নিলে হইত আজ আমার বোনের এই অবস্থা হতো না।আমি আমার বোন হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাচ্ছি।
মৃত গৃহবধূর পিতা মাজদার রহমান বলেন, মোতালেবের পূর্বের স্ত্রী সন্তান আছে। তারা সবাই মিলে আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমার মেয়ে আমার বাসায় চলে এসেছিল কিন্তু তারা জোর করে মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে নিয়ে আসে আর পরের দিন আমার মেয়ের মৃতদেহ পায়। আমার মেয়েকে মেরে ফেলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।
মৃত গৃহবধুর পরিবার তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দিতে চাচ্ছে কিন্তু মামলা নেওয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে কাটাখালি থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কেউ কাটাখালি থানাতে অভিযোগ করতে আসলে অভিযোগ হয়না এমন রেকোর্ড নাই। ভুক্তভোগী থানায় আসুক অবশ্যই অভিযোগ গ্রহন করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply