প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ৬, ২০২৪, ২:০২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ৬, ২০২৪, ১:৪৫ অপরাহ্ণ
অনিয়ম ঢাকতে অপপ্রচার, শ্রম আইন বাস্তবায়নে বাধা
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের জিশান এন্টারপ্রাইজ নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানে শ্রম আইন বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি ও শ্রম আইন বাস্তবায়নকারী পরিদর্শকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার অভিযোগ উঠেছে।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জিশান এন্টারপ্রাইজের মালিক জাহাঙ্গীর আলম পলাতক হলেও তার ম্যানেজার হিমেল সরকারি কর্মকর্তাদের ফাঁসাতে কৌশল অবলম্বন করেন। এতোদিন ক্ষমতার দাপটে শ্রম আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজশাহী নগরীর থিম ওমর প্লাজায় এপেক্সের ডিলারশীপ, সাহেব বাজারের জুতার দোকান ও ফ্যাশন হাউজে কোনো প্রকার শ্রম আইন বাস্তবায়ন করা হয়নি। উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার শ্রম আইন ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর ৩৫৪ ও ৩৫৫ ধারা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োজিত না থাকলেও লাইসেন্স গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। আ'লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার হিমেল প্রভাব বিস্তার করে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে এখনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এ অবস্থায় রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম তাদের আইনি নোটিশ প্রদান করলে তাকে ফাঁসাতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার হিমেল।
অভিযোগ উঠেছে, আইনি নোটিশ পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিমেল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক আজহারুল ইসলামের কাছে লাইসেন্স বিষয়ে পরামর্শ নিতে যান। অফিসে বসেই সে তাদের সঙ্গে কথা বার্তা ও কি কাগজপত্র লাগবে তা বুঝিয়ে দেন। এরপরই সে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ তোলে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করে সম্মানহানির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে শ্রম পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম বলেন, গত ১৪ অক্টোবর লাইসেন্স গ্রহণের জন্য জিশান এন্টারপ্রাইজকে দুটি নোটিশ প্রদান করা হয়। তার প্রতিষ্ঠানে মহিলা ও পুরুষ উভয় শ্রমিক কাজ করেন। এজন্য তার শ্রম আইন অনুযায়ী লাইসেন্স গ্রহণ ও বিধিমালা বাস্তবায়ন করা জরুরি। এর আগে উক্ত প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতার বলে শ্রম আইন বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হয়নি। এখন আবারও ম্যানেজার হিমেল প্রভাব বিস্তার করে কিছু দুষ্কৃতকারীকে আমার পিছনে লাগিয়ে মিথ্যাচার করছেন। যদিও আমি এ বিষয়টি আমার উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের জানিয়ে রেখেছি, তদুপরি আমিও আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করবো। লাইসেন্স তাদের নিতে হবে। কারণ এটা সরকারি আইন। আইনের বলেই তাকে লাইসেন্স নিতে হবে। কোনো প্রকার অপতৎপরতা কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।
জানতে চাইলে রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শ্রম আইন বাস্তবায়নে মালিক পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই এগিয়ে আসে, কিছু তো ক্ষমতা দেখায়। তবে আইন বাস্তবায়নে কোনো ক্ষমতা বা অপপ্রচার করে লাভ হবে না। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আইন বাস্তবায়নে আইনিভাবে এগিয়ে সকল বিষয় মোকাবিলা করা হবে।
কথা বলতে জিশান এন্টারপ্রাইজের মালিক গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার ম্যানেজার হিমেলকে ফোন দিলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি পাওয়া যায়নি।
© 2024 Probashtime