সোহেল রানা,যশোর প্রতিনিধিঃবলছি যশোরের দুইজন অদম্য মেধাবী ছাত্রের কথা।ওদের সংসারে নুন আন্তে পান্তা ফুরানোর মত অবস্থা।বাবা থেকেও না থাকার মত।পড়াশোনার খরচ ভালো মতো না জুটলেও এ অদম্য মেধাবীদের সাফল্যে শেষ পর্যন্ত কোন কিছুই বাধা হতে পারেনি।
এবারের এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে অবাক করেছেন তারা।এদের কেউ স্বপ্ন দেখছে ডাক্তার হওয়ার কেওবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার।এ অবস্থায় সমাজের হৃদয়বান মানুষের একটু সহযোগিতা পেলে যশোরের ঝিকরগাছা শংকরপুর রাজবাড়ীয়া গ্রামের এ অদম্য মেধাবীদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন পূরণের পথ অনেকটাই সুগম হবে।
গোলাম মোস্তফা : বাবা আবুল কাশেম একজন ঘের পাহারাদার।মাসে যা বেতন পায় তাতে তার সংসার চালানো যেখানে কঠিন সেখানে পড়াশুনার খরচ বহন করা তার পক্ষে সহজ নয়।ভিটে বাড়ি বলতে দেড় কাটা জমিতে টালীর ঘরে তাদের বসবাস।৪জন সদস্যদের সংসারে চরম অভাব অনটনের পরেও পড়াশোনা করে সেই গোলাম মোস্তফা এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে অবাক করেছেন।
শংকরপুর হরিদ্রাপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক শাখায় জিপিএ-৫ অর্জনকারী গোলাম মোস্তফা এবার স্বপ্ন দেখছে ডাক্তার হওয়ার।কিন্তু দারিদ্রতার মাঝে ভবিষ্যতের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা এমন শঙ্কা তাড়া করছে তাকে।
গোলাম মোস্তফা জানান, আমি লেখাপড়ার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু বাধা শুধু দারিদ্রতা।তবে অদম্য এই মেধাবীর পড়াশোনার খরচে সহযোগিতা করলে সে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে বলে জানালেন হরিদ্রাপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
আকাশ : বাবা ভ্যান চালক মনিরুজ্জামান মনি।সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা আয় করে তাই দিয়ে কোন রকমে সংসার চালায়।বাড়ি ভিটে বলতে মাত্র দেড় শতক জমিতে খোলার টালীর ঘরে করে বসবাস।শুধু ভ্যান চালিয়ে ৪সদস্যের পরিবারে খাবার জোটে না ভাল মতো। তাই অতি কষ্টে পড়াশোনা করে আসছেন আকাশ।
এ বছর শংকরপুর হরিদ্রাপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে অদম্য এ মেধাবী।আকাশের ছোট বোন বাগআঁচড়া গালর্স স্কুলের মেধাবি ছাত্রী।স্কুল একটু দুরে হওয়ায় বাবা প্রতিদিন নিজের ভ্যান চালিয়ে পৌঁছে দেন।দুই ভাই বোনের পড়াশুনা চালাতে তার বাবাকে হিমশিম খেতে হয়। দারিদ্র্যতার মাঝে আকাশের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন কি পূরণ হবে এমন শঙ্কা তার।
এ ব্যাপারে শংকরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা কবিরুজ্জামান মিঠু জানান,রাজবাড়ীয়া গ্রামে দুই গরিব পরিবারে দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র।এরা হলেন-একজন গোলাম মোস্তফা অপরজন আকাশ।তারা দুজনই এসএসসি পরীক্ষায় হরিদ্রাপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপি এ ৫ পেয়ে উত্তির্ণ হয়েছে।
মোস্তফা ডাক্তার হতে চায় আর আকাশ ইন্জিনিয়ার হতে চায়।কিন্তু প্রশ্ন একটাই ? অর্থের কাছে এরা খুবই দুর্বল। কিভাবে এরা ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হবে।এ অবস্থায় সমাজের হৃদয়বান মানুষের একটু সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে তাদের স্বপ্ন পুরন হবে বলে তিনি মনে করেন।
Leave a Reply