ছোট্ট বেলার সেই দিনগুলি, মার্বেল ঘুড়ি আর ডাংগুলি। মনে পড়ে শুধু মনে পড়ে, পাবো কি আর সেই দিন ফিরে…..। শৈশবের স্মৃতি জড়ানো এমন শ্রুতি মধুর গানের কথার মতোই করোনাকালে ঘরবন্দী নানান পেশার মানুষ অবসর সময়ে ঘুড়ি উড়িয়ে অনেকেই সেই শৈশবে ফেরার চেষ্টা করছেন। করোনার ভয়াবহতা বদলে দিয়েছে বাংলাদেশের দৃশ্যপট। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলা মানুষ এখন গৃহবন্দি। নিরাপদে থাকতে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। সেই সঙ্গে বন্ধ সব আউটডোর খেলাধুলা। আর এই লম্বা ছুটিতে বাঙালির ঐতিহ্য রঙিন ঘুড়ি নিয়ে মেতে আছেন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলের তরুণ প্রজন্মসহ বিভিন্ন বয়সি মানুষ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অনেকেই একসঙ্গে খোলা মাঠ, বিল, ঝীল কিংবা বাড়ির ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির ঘুড়ি উড়াতে দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কুড়ালিয়া গ্রামের যুবসমাজের উদ্যোগে শনিবার(২৭জুন) সকালে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে এবং প্রত্যেক প্রতিযোগির মুখে মাস্ক পড়া বাধ্যতামুলক করে এই ঘুড়ি উড়ানো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে উৎসুক লোকজন এই ঘুড়ি প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেন। টাঙ্গাইল শহর হতে শুরু করে, জেলার প্রায় সব উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, বিকেল হলেই যেনো মুক্ত আকাশে চলছে ঘুড়ির মেলা। আকাশে বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে উড়ছে নানা রঙের নানা ধরনের ঘুড়ি। বিভিন্ন বাসাবাড়ির ছাদেও চলে ঘুড়ি উড়ানো প্রতিযোগিতা। করোনাকালীন অবসাদ দূর করার এক সুস্থ বিনোদন।
ঘুড়ি উড়ানো অনেক প্রতিযোগি বলেন, শৈশবে বন্ধুদের নিয়ে বর্ষার বিকেলে রং বাহারি ঘুড়ি উৎ্সবে মেতে উঠতাম। একেকটা ঘুড়ির ভিন্ন ভিন্ন নাম রাখতাম। কখনো কখনো ইচ্ছে করেই একটি ঘুড়ির সুতা দিয়ে অন্যটির সুতা কেটে আনন্দে মেতে উঠতাম। কিন্তু যান্ত্রিকতা আর কর্মজীবন আমাদের কাছ থেকে শৈশবের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে কলেজ বন্ধ রয়েছে। তাই এ সুযোগে শৈশবের সেই পুরোনো স্মৃতিতে ক্ষণিকের জন্য ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও পুরোনো সেই বন্ধুরা এখন আর পাশে নেই। করোনার অবসরে বর্ষার গগনে রঙিন ঘুড়ি উড়িয়ে সময় পার করতে দেখা গেছে শিশু, কিশোর, যুবক ও অনেক মধ্যবয়সীদেরকেও।
Leave a Reply