রাজশাহী প্রতিনিধি : জাহাজ মালিক ফারুক হোসেন জীবনের সর্বোস্ব হারিয়ে এখন রিকশাচালক ! সেতু এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার স্বীকার হয়ে এ অবস্থা বলে তার অভিযোগ।
মোহাম্মদ ফারুক হোসেন জানান, তিনি পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। গ্রামের কর্মঠ একজন সহজ সরল মানুষ ছিলেন । নিজের স্বপ্ন পূরণ ও ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে নিজের কিছু জমানো টাকা, বসতভিটে বিক্রি ও আত্নীয়-স্বজনের থেকে ধার নেয়া সর্ব মোট ৪০ (চল্লিশ) লক্ষ টাকা খরচ করে এক বছর সময় দিয়ে একটি জাহাজ(বার্জ) তৈরি করেছিলেন ।
জাহাজটি বানানোর পর মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের পরিবার টি বেশ ভালো ভাবেই চলছিল । কিছুদিন যাওয়ার পর ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে সেতু এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি কোম্পানী’তে মাসিক চুক্তি’তে মো.ফারুক হোসেন তার নিজ জাহাজ টি ভাড়া দিলেন পদ্না সেতুর বালু ,সিমেন্ট সহ বিভিন্ন মালামাল বহন করার জন্য।
চুক্তির ১৬ দিন এর সেতু এন্টার প্রাইজ কর্তৃপক্ষের অসাবধানতায় জাহাজটি’তে মাত্রাতিরিক্ত মালামাল বোঝাই করার কারনে জাহাজটি পদ্না সেতু সংলগ্ন এলাকায় ডুবে যায় । ডুবে যাওয়ার প্রায় এক মাস পার হয়ে গেলেও সেতু এন্টার প্রাইজ কর্তৃপক্ষ জাহাজটি পানি থেকে উঠানোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি । যদিও ভাড়ার চুক্তিপত্রে জাহাজের যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার দ্বিতীয় পক্ষ অর্থাৎ সেতু এন্টারপ্রাইজের নেয়ার কথা। অন্যদিকে জাহাজটি উদ্ধার না হলেও চায়না কর্তৃপক্ষ পথ পরিস্কার করার জন্য অন্য তিনটি জাহাজের মাধ্যমে ডুবে যাওয়া জাহাজটিকে শিকল দিয়ে টেনে ৫০০ গজ দূরে সরিয়ে দেয়ায় আরও বিপাকে পড়েছে ফারুক হোসেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সেতু এন্টারপ্রাইজের শামীম হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে চুক্তির বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, সেতু এন্টারপ্রাইজের সাথে ফারুক হোসেনের কোন চুক্তি নাই, ইকবাল হোসেন নামে এক বালু ব্যবসায়ীর মাধ্যমে সে জাহাজটি ভাড়া খাটাতো।
উল্লেখ্য, মো: ফারুক হোসেন( ৪৫) ঝালকাঠি সদর উপজেলার মোবারক আলী হাওলাদারের ছেলে। ইকবাল হোসেন একজন বালু ব্যবসায়ী আর সেতু এন্টারপ্রাইজের সাপ্লাইয়ার।
বার্জের মালিক ফারুক হোসেন সেতু এন্টার প্রাইজের শামীম হাসানের সাথে বারংবার যোগাযোগ ও দেখা করেও কোন সুরাহা পাননি। সেতু এন্টারপ্রাইজ কর্তৃপক্ষ আজ না কাল করতে করতে আর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ফারুক হোসেনকে ঘুরাচ্ছেন। এদিকে পরিবার নিয়ে ফারুক হোসেন তার শেষ সম্বল জাহাজটি হারিয়ে সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। তিন বেলা খাবার জোগাতে খাচ্ছেন হিমশিম। উপায়হীন হয়ে পেটের ভাত জোগাতে ফারুক এখন রাজশাহী শহরের রিকশাচালক।
কান্নাজড়িত কন্ঠে ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার জাহাজটি উদ্ধার অথবা সেতু এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে উপযুক্ত ক্ষতি পুরণ পাওয়ার জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Leave a Reply