হাকিকুল ইসলাম খোকন ,বাপসনিউজ প্রতিবেদক : কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন মিঠু ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরে কৃষ্ণ দেবনাথের বিরূদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়মসহ বিদ্যালয়ের ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বিদ্যালয়ে দাতা ময়নাল হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। গত মঙ্গলবার বিকালে দেবিদ্বারের কুরুইন এলাকায় আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে মোহনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, অভিভাবক ও এলাকার বিভিন্ন পেশার কয়েকশ লোক উপস্থিত ছিলেন।খবর বাপসনিঊজ:
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বর্তমান সভাপতি ময়নাল হোসেন বলেন, শাহাদাৎ হোসেন মিঠু পরিচালনা কমিটির সভাপতি থাকাকালীন সময়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি মাধ্যেমে বিদ্যালয়ের প্রায় ২৫ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত মতে, গত ৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে ১০ লাখ ৮১ হাজার ৪৩০ টাকা এবং সাধারন তহবিল হইতে উত্তোলিত ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭২০ টাকা একুনে ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৫০ টাকা ব্যায়ের স্বপক্ষে বৈধ কোন ব্যায় ভাউচার নাই, যাহা অর্থ অত্মসাত বলিয়া প্রমানিত হয়। এছাড়া ২ জানুয়ারি ৫০ হাজার টাকা এবং ৪ জানুয়ারী ২ লাখ টাকা ক্যাশ লেজারের আয়ের হিসাবে অন্তভূক্তি হয়নি। এছাড়া অনুমতি ছাড়া গাছ বিক্রি ও দুই মাসে বিদ্যালয়ের তহবিল হতে দেড় লাখ টাকার মামলা খরচ দেখানো হয়েছে যা অসঙ্গতিপূর্ন।
তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়ে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি হলে সহকারি প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব না দিয়ে বিভিন্ন চলচাতুরীর মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে সহকারী শিক্ষক বাবু হরে কৃষ্ণ দেবনাথকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের যোগসাজসে সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন মিঠু ভূয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে বিদ্যালয়ের এসব টাকা আত্মসাত করেন। আমি (ময়নাল হোসেন) সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব অনিয়ম তদন্তে অভ্যন্তরীন আয়-ব্যায় নিরীক্ষন কমিটি গঠন করি। ওই কমিটি বিগত ০১-১১-২০১৬ থেকে ৩১-১২-২০১৭ পর্যন্ত সময়ের বিল ভাউচার নিরীক্ষন করে ব্যাপক অনিয়ম ও টাকা আত্মসাতের প্রমান পান। এসব অনিয়ম ও দূনীতির বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ করলে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসান গত ৩ মার্চ ২০২০ তারিখে সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাহিদা আক্তার কে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই তদন্ত কমিটি গত ১৮ মার্চ ২০২০ বিদ্যালয়ে সরজমিনে এসে তদন্ত করে আমার অভিযোগের সত্যতা পান।
তিনি আরো বলেন, গত ২৬ জুলাই ২০২০ দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করেছেন। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসক ,দূর্নীতি দমন কমিশন (দূদক) সহ সংশ্লিষ্টদের নিকট দূর্নীতিবাজ সাবেক সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন মিঠু ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরে কৃষ্ণ দেবনাথ এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। আরো বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মোতাহের হোসেন ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম।
এদিকে বর্তমান সভাপতির আনা দূর্নীতি, অনিয়ম ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন মিঠু বলেন, আমি সহ সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেসব অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে তা তৎকালীন সময়ে আয়-ব্যায়ের হিসাব নিরীক্ষা কমিটি দ্বারা নিরীক্ষা করা হয়। এতে কোন অনিয়ম পাওয়া যায়নি। বর্তমান সভাপতি কারসাজি করে আগের বিল-ভাউচার সরিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগকে তিনি অপপ্রচার বলেও দাবি করেন।
Leave a Reply