রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর এই কর্মকর্তা সহকর্মীদের ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন। তাকে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার নাটক সাজাতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে লাখ লাখ টাকার অনিয়ম ও দূর্নীতির খবর। একাধিক সুত্রে জানা গেছে, তিনি করোনা কালিন প্রায় ৯০ লাখ টাকার মালামাল ক্রয় করার সময় সরবরাহ কারী প্রতিষ্ঠান এর কাছ থেকে ফাঁকা চেক নিয়ে কয়েক লাখ টাকার মালামাল সরবরাহ নিয়ে বাকী টাকার ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলনের পর তাকে ফাঁকা চেক ফেরত দেন । করোনা পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে বরাদ্দ কৃত টাকায় তেমন কোন জিনিস না কিনে আত্তসাৎ করেছেন । শুধু তাই নয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খাবার ও ওষুধ সরবরাহ কারী প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে মোটা অংকের কমিশন নেয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরূদ্ধে। আর এই সব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত ভাবে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার নাটক সাজানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার একাধিক সহকর্মী ডাক্তার ও কর্মচারীদের শোকজ করার ভয় ভীতি দেখিয়ে বিভিন্নভাবে কেনাকাটার ফাইল সই করিয়ে নিয়েছেন।
মাদক সেবন সহ তার বিরূদ্ধে ইতোপূূর্বে নাচোল সহ বিভিন্ন কর্মস্থলে কাজ করার সময় এরকম একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও বেরিয়ে এসেছে। এনিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে, ভুক্তভোগী দুই চিকিৎসক বলেন, সিভিল সার্জনের পাঠানো তদন্ত টিমকে অসহযোগিতার জন্য যেন তারা স্টোর দেখতে না পায় তদন্তের দিন THA নিজে বেলা দুটো পর্যন্ত পালিয়ে বেড়াচ্ছিল এবং স্টোরকিপারকে নিজ কব্জায় ধরে রেখেছিল। পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে বেলা দুইটার পর আসতে বাধ্য হন এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও ভিজিট হয় এবং ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। THA এক সপ্তাহ সময় নেন সবকিছু ঠিক করার জন্য। কিন্তু কোন ধরনের রিকভারিতো দুরের কথা বরং ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা চলছে । সর্বশেষ কেনাকাটা কমিটিতে আমরা ছিলাম। কিন্তু তার অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয় এবং এমন নাটক সাজায় সে । THA ডাক্তার আসাদ একজন পুরো মাত্রায় মাদকাসক্ত । এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নাচোলে থাকার সময় কয়েকবার নেশার আখড়া হতে পুলিশের হাতে ধরা পরে এবং ফলশ্রুতিতে পানিশমেন্ট পোস্টিং হয় সাতক্ষীরা। সেখানেও একই সমস্যা তৈরী করে। এবং ওখানেও টিকতে পারেনি তিনি । এরপর নওগাঁ ধামুরহাটেও তার চরিত্র একটুও বদলায় নি। সর্বশেষ দূর্গাপুরে ভয়াবহ দূর্নীতির বিস্তার ঘটায়। উপজেলায় সবধরনের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম করেন। ডাক্তারদের জন্য করোনায় আবাসন ও খাওয়া বাবদ একটাকাও খরচ না করে ভূয়া বিল ভাউচার করে পুরোটাই আত্মসাৎ করে এবং উপজেলায় হাসপাতালে পরিষ্কার পরিছন্নতা বাবদ যে বরাদ্দ এসেছিল তার পুরোটাই আত্মসাৎ করে এবং উন্নয়নমূলক যে বরাদ্দ সেটাও আত্মসাৎ করে। জেনারেটর পরিচালনা বাবদ প্রতিমাসে ভুয়া বিল ভাউচার করে সেটাও মেরে দেয় অথচ জেনারেটর একদিনও চলেনি। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার এর কাছ থেকে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বড় ধরনের অ্যামাউন্ট সে গ্রহণ করে। এমন ধরনের বহু অনিয়ম করেন তিনি। সিভিল সার্জন স্যার এবং ডিভিশনাল ডাইরেক্টর স্যার পুরো বিষয়গুলো অবহিত এবং বিব্রত। গতকালের যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা তদন্ত কমিটি আসার কারণেই পুরোপুরি আমাদের উপর খড়গ হস্ত হয়েই সে নাটক সাজিয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা: এনামুক হক বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি, আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকলে একটু শক্ত হতেই হয় আর এ কারনে নিজেদের মধ্যে শত্রু তৈরি হয়। আমার সাথে শত্রুতা করে এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে, যেগুলো মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আর তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন কর্তৃপক্ষ। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মাদক সেবন করলে কি আপনাকে বলবো ?
Leave a Reply