জলজ ফুলের রাণী পদ্ম
দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন রঙের মেলা বসেছে।পানির ওপর বিছানো থালার মতো গোলাকার সবুজ পাতা । ফাঁকে ফাঁকে লম্বা ডগার ওপর দিগন্তজোড়া পদ্মফুলের মেলা। অসংখ্য পাপড়ির চমৎকার বিন্যাসে সজ্জিত একেকটি পদ্ম যেমন সুগন্ধ ছড়ায়,তেমনি যেকোন মানুষের হৃদয় কাড়ে খুব সহজে। তাই হয়তো পদ্ম কাঁটার যন্ত্রণাও এর স্পর্শ কে আটকে রাখতে পারে না ।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ইছামতি বিলে এমন মনোরম পরিবেশ। নড়াইলের সব চেয়ে বড় বিল ইছামতির বিল। ইছামতি বিলে প্রতিবছরের মতো এবারও পদ্মফুল ফুটেছে। ইছামতির বিলে পদ্মফুলের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রমণপ্রেমীরা। বিকেল হলেই ভ্রমণপিপাসুদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। পদ্মফুলের সৌন্দর্য তাদের স্বাগত জানায়।
এর মাধ্যমে মৌসুমি কর্মসংস্থান চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। ভ্রমণপিপাসুদের উপস্থিতিতে নৌকার কদর বেড়েছে। বিলে পদ্মফুলের পুরো অংশ নৌকায় ঘুরিয়ে দেখাতে জনপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা গুনতে হবে। একটি ছোট নৌকায় তিন-চারজন ওঠা যায়।
নড়াইল শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দুরে মিঠাপুর বাজার। মিঠাপুর বাজার থেকে ২ কিলোমিটার বলাডাঙ্গা। বলাডাঙ্গা থেকে নৌকায় করে যেতে হয় ইছামতি পদ্মবিলে।
বিলে ঘুরতে আসা সোহাগ বলেন, আমি আগে কোন দিন এত পদ্মফুল একসাথে দেখিনি। পদ্মফুলের সৌন্দর্যের প্রেমে বিকেল হলেই ছুটেআসি পদ্মবিলে।
বিলে ঘুরতে আসা মাগুরা জেলার সুমন বলেন, আমি ফেচবুকের মাধ্যমে ইছামতি বিলের পদ্মবিলের ছবি দেখে ভালোলাগে। বন্ধুদের নিয়ে পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এসেছি ইছামতির পদ্মবিলে।
বিলে ঘুরতে আসা প্রিয় বলেন, পদ্মফুলের জন্য ইছামতি বিল অসাধারন লাগে। পদ্মফুল স্পর্শ করার অনুভূতি অন্যরকম। পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে আনন্দিত শিশুরাও।
স্থানীয়দের কাছে জানা যায়,একসময় বিয়েতে বা মেজবানে ডেকোরেটরের ভাড়া করা থালা-বাসন মিলতো না। তখন অতিথি আপ্যায়ন করা হতো পদ্মপাতায়। শুধু পদ্ম আর পাতাই নয়,দেশি মাছের ভান্ডার ছিলে পদ্মবিলে।কৈ,শিং মাগুর শোল মাছের মজুদ থাকতো এখানে। শীতে পানি কমতেই মাছ ধরতে পানিতে নেমে পড়তো সবাই। চারদিকে থাকতো উৎসবের আমেজ।
Leave a Reply