নাগরপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
সময় মতো কর্মস্থলে যোগ দিতে না পারলে চাকরি চলে যাবে। আর এ কঠিন সময়ে একবার যদি চাকরি চলে যায় তাহলে বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার ইপিজেডের একটি পোষাক শিল্প কারখানায় কর্মরত টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ইব্রাহিম মিয়া। তিনি এই কঠোর লকডাউনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বউ আর ছোট ছেলে নিয়ে আশুলিয়া যেতে অপেক্ষা করছেন উপজেলার তালতলা স্ট্যান্ডে।
ইব্রাহিমের মতো শত শত মানুষ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যেতে অপেক্ষায় আছেন। কারন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা কোন যানবাহন পাচ্ছেন না। রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা রবিবার থেকে খুলে দেওয়ার হঠাৎ সিদ্ধান্তের পর নাগরপুর ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে নাগরপুর- মির্জাপুর ভায়া মোকনা সড়ক দিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ। তবে, গণপরিবহনের অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। শনিবার সকাল থেকে নাগরপুরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, বটতলা স্ট্যান্ড, তালতলা স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কর্মস্থলে ফিরতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মানুষ। সেই সঙ্গে আষাঢ়ে বৃষ্টি তাদের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ।
ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রো বাস, পিকআপ ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে যে যেভাবে পারছেন সপরিবারে ঢাকা ফিরছেন মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও কর্মস্থলে ফেরার তারা শ্রমিক ও কর্মজীবী মানুষের।
এদিকে গণপরিবহণ না থাকায় কয়েকগুণ বেশি টাকা খরচ করে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে নিম্নআয়ের এইসকল মানুষদের। মানুষের এত উপচে পড়া ভীরের কারনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। মুখে মাস্ক ছাড়া, গাদাগাদি করে যানবাহনে উঠছেন যাত্রীরা।
সাভার আশুলিয়া এলাকার একটি গার্মেন্টসের কর্মী দম্পতি নার্গিস আক্তার ও শিমুল মিয়া তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে ঈদ করতে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার নিজ গ্রামে গিয়েছিলেন। নাগরপুর বটতলা বাসস্ট্যান্ডে যানবাহনের অপেক্ষায় থাকা এই দম্পতি জানান, তারা জানতেন লকডাউন শেষ হলে গার্মেন্টস খুলবে। কিন্তু হঠাৎ কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে তাদের তড়িঘড়ি করে রওনা দিতে হচ্ছে। কিন্তু কোনো যানবাহন পাচ্ছেন না। কয়েকটি মিনি ট্রাকে উঠার চেষ্টা করেও সঙ্গে বাচ্চা ও ব্যাগ থাকায় উঠতে পারেননি বলে জানান তারা। তারা আরো বলেন, ‘কী আর করবো, চাকরি বাঁচাতে হলে যেভাবেই হোক যেতে হবে।’
স্ট্যান্ডে কোন অটো রিক্সা বা সিএনজি আসলেই হুমরী খেয়ে পড়ছেন মানুষ। যানবাহন না পেয়ে অনেকেই রিক্সা বা ভ্যানে, এমনকি পায়ে হেঁটেও রওনা হয়েছেন। লকডাউনের কারণে বাস চলাচল না করায় ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্নভাবে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ।
Leave a Reply