ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দাবিতে ব্যানার হাতে রাস্তায় নেমেছে সব-শ্রেণিপেশার মানুষ। বুধবার বেলা ১১ টার সময় শহর চৌরাস্তায় প্রায় ২০ টিরও বেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একই দাবিতে ব্যানার হাতে ছোট ছোট র্যালী নিয়ে আসে জমায়েত হয়। এতে সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, তরুণ, যুবক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং রাজনৈতিক কর্মীরা অংশ নেন। এ সময় একটি বিশাল মানবন্ধন করেন তারা। মানবন্ধনে জেলার প্রায় ৫ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে। ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চাই আন্দোলন কমিটির আয়োজনে মানববন্ধনটি ঘন্টাব্যপী চলে।
মানববন্ধনে ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চাই আন্দোলন কমিটির সমন্বয়ক সাংবাদিক শাহিন ফেরদৌস বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী এখানে চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত শয্যা নেই। আমরা দেখেছি এখানে গাছতলাতে শিশুদের চিকিৎসা দিতে। ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুর আমরা দেখেছি রংপুর মেডিক্যাল কলেজে যেতে যেতে রাস্তায় মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা জেলাবাসী একটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চাই। যেনো এ জেলা সহ পঞ্চগড় জেলার মানুষ এখানে উন্নত চিকিৎসা পায়। চিকিৎসা নেওয়ার পথে হাসপাতালে যাওয়ার আগে যেন কেউ না মারা যায়।
বিশিষ্ট লেখক সুবর্ণ আহম্মেদ বলেন, উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওবাসীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি আছে। তার মধ্যে একটি হলো ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ঠাকুরগাঁওয়ে দিন দিন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জেলাটি একটি সম্ভাবনায় ও কৃষি নির্ভর জেলা। ফলে এটি অঞ্চলটি একটি বাণিজ্যিক অঞ্চল হিসেবে রুপ নিতে চলেছে। এ জেলার উন্নয়ন তরান্বিত করতে এবং আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে একটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জেলার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষাক, ছাত্র সমাজ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্মচারী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মী সহ সাধারণ মানুষরা এ মানববন্ধনে তাদের বক্তব্যে ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চাই এই দাবিতে বক্তব্য রাখেন।
এদিকে একই দিনে সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন সভাকক্ষে আয়োজিত জেলা স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেছেন, শিঘ্রই ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল হবে। এসময় সাংসদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ে সফরে এসে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারমধ্যে অন্যতম ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। আমরা আশা করছি- খুব শীঘ্রই ঠাকুরগাঁও জেলায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি একটি মেডিকেল কলেজও হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য অনেক কাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। আশা করছি সামনে সরকারের এক নেকের সভায় ঠাকুরগাঁও জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। খুব শীঘ্রই ঠাকুরগাঁওবাসী এই খুশির সংবাদটি পাবেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল দিয়েছে। সেক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আরও ২৫০ শয্যার হাসপাতাল আমরা সামনে পেতে যাচ্ছি। ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হলে এটিকেই ঠাকুরগাঁও জেলায় মেডিকেল কলেজ হিসেবে রূপান্তর করা হবে।
রমেশ সেন বলেন, আর থাকবে আমাদের বিমানবন্দর। যখন আমাদের জেলায় ইপিজেড নির্মাণ হয়ে যাবে; তখন এই জেলায় হাজার হাজার শিল্প-কলকারখানা নির্মাণ হবে এবং হাজার হাজার বিদেশিরা এখানে আসবে। সেই সাথে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তখন অটোমেটিক ভাবেই ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালু হয়ে যাবে।
Leave a Reply