আব্দুস শুকুর: শ্রীমঙ্গল থেকেঃ
শ্রীমঙ্গল জিআরপি থানাধীন রশিদপুর রেল ষ্টেশন সংলগ্ন দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে রেলে কয়েক লক্ষ টাকার পাথর নষ্ট হওয়ার ঘটনায় আইনগন ব্যবস্থা নিতে রেলওয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।
অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ের এস্টেট বিভাগ থেকে ২৫ জনের নাম ঠিকানা উল্লেখসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেয়া হলেও জিআরপি থানা থেকে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
জিআরপি শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ বলেছে ‘এ পাথর নষ্টের ঘটনায় তাদের কোন দায়িত্ব নেই’।
জানা গেছে , গত ১৯ এপ্রিল রাতে শ্রীমঙ্গল জিআরপি থানার অধিন হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার রশিদপুর রেল ষ্টেশন এর পশ্চিমে বড়গাঁও এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই দল গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ চলাকালে জসিম ও তাজুল ইসলামের কয়েকশ অনুসারী সিলেট-আখাউড়া রেল লাইনের উপর দাঁড়িয়ে শাহিনের বাড়ি ঘর লক্ষ্য করে রেল লাইনের পাথর ছুঁড়ে মারে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ রেলের এষ্টেট কার্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট গ্যাংয়ের মেইট/কিম্যানের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারেন দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে এই মারামারির ঘটনায় রেল ট্র্যাক থেকে বিপুল পরিমান সরকারী পাথর খোঁয়া গেছে।
কিন্তু রেলের পাথর খোঁয়া যাবার ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশ কর্তৃক কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় রেলওয়ের এস্টেট বিভাগের এসএসই/ওয়ে/শ্রীমঙ্গল এর প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম গত ২২ এপ্রিল জিআরপি ওসি শ্রীমঙ্গলকে সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতে একটি চিঠি দেয়।
এর প্রেক্ষিতে জিআরপি
ওসি আলমগীর হোসেনের নির্দেশে এসআই হুমায়ন আহমেদ ট্রলি নিয়ে কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসে। আর এরপর পরই অজ্ঞাত কারণে জিআরপি পুলিশ কর্তৃক আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার সব প্রক্রিয়া থেমে যায়।
ঘটনাস্থল বড়গাঁর বাসিন্দা সরকারী চাকরীজীবি আব্দুল মতিন ক্ষুদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘ঘটনার রাতে শতাধিক ব্যক্তি রেললাইনের উপর দাঁড়িয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষের বাড়ি ঘর লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো পাথর ছুঁড়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এতে কয়েকশ ঘনফুট সরকারী পাথর বাড়ির উঠানে, রাস্তায়, ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। এঘটনায় জিআরপি পুলিশ নাম কা ওয়াস্তে তদন্ত করে দায়িত্ব সেরে ফেলেছেন।
অথচ সরকারী এই মূল্যবান বিপুল পরিমান পাথর এভাবে নষ্ট করা হলেও অদৃশ্য কারণে তারা কোন আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছে না’ বলে মতিন জানান।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জিআরপি শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, ‘এস্টেট বিভাগের চিঠির প্রেক্ষিতে তারা তদন্ত করে দেখেছেন ঘটনাস্থল রেল লাইন থেকে ১৫০ ফুট দূরে।
তিনি বলেন এই দূরতে কোন ঘটনার দায় বেঙ্গল পুলিশের (থানা পুলিশ)’। তিনি বলেন, এই ঘটনায় বাহুবল থানায় মামলা হওয়ার কথা শুনেছি।
রেল লাইনের পাথর ১৫০ ফুট দূরে নেয়া হলে রেল পুলিশ কি দায়িত্ব এড়াতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পি ডাব্লিউ থেকে চিঠিতে যে দূরত্বের কথা বলা হয়েছে সে অনুসারে এটা আমাদের এখতিয়ারে পড়ে না’।
জানতে চাইলে রেলের এস্টেট ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার তথ্য প্রমান দিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে জিআরপি ওসসিকে চিঠি দেই।
তিনি বলেন, ‘জানতে পেরেছি জিআরপি থানার ওসি তদন্তের নামে আসামীদের সাথে সমঝোতা করে এখন ১৫০ ফুট দূরত্বের আইন দেখাচ্ছেন’। তিনি বলেন, ‘রেল বিভাগের সম্পত্তি -যেটা যেখানে যেভাবে পড়ে আছে তার নিরাপত্তার দায়িত্ব জিআরপি পুলিশের। এটা যদি তাদের দায়িত্বে না পড়ে তাহলে রেল পুলিশর দায়িত্ব কি?’
বেঙ্গল থানায় মামলার বিষয়ে জিআরপি শ্রীমঙ্গল থানার ওসির ভাষ্য যাচাই করতে বাহুবল থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ‘সেখানে সংঘর্ষের ঘটনায় থানার এসআই শহিদুল ইসলাম তদন্ত করে এসেছন। তদন্ত প্রক্রিয়াধীন, তবে রেলের পাথরের ক্ষতি সাধনের কোন বিষয় এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত নয়।
এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। আর পাথরের বিষয়টি এই প্রথম শুনলাম’-এমনটি বললেন বাহুবল থানার ওসি।
Leave a Reply