সুজন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: হ্যাঁ ছবিতে যাকে দেখছেন তিনিই হচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বর্তমান জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে যখন মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরাসহ জীবন যাপনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ফেলেছে। তখন বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সুরক্ষার, খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি।
ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের ল্যাকটেটিং মাদারদের তাদের শিশুদের পুষ্টিহীনতা দুর করার জন্য শিশুদের হাতে পুষ্টিকর খাদ্য তুলে দিচ্ছেন তিনি। শুধু ল্যাকটেটিং মাদার তাদের শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য তুলে দেন না তিনি। করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া, অসহায় দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, হতদরিদ্রদের মাঝেও প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন তিনি। শুধুই কি তাই? মধ্যবিত্ত যারা লোকচক্ষু ও লজ্জার জন্য কারও কাছে কোন কিছু চাইতে পারেন না বা চাইতে পারচ্ছেন না তাদের জন্য জেলা প্রশাসনের নিজ উদ্যোগে চালু করেছেন হটলাইনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য ‘সময়ের দাবি, ত্রাণ যাবে বাড়ি’ এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিদিন পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের প্রায় ২০০ পরিবারের মানুষের বাড়িতে পৌঁচ্ছে দিচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী প্রশাসনের ৬টি টিম।
এমনকি জেলা প্রশাসক নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে গিয়ে নিজেই পুষ্টিকর খাদ্য পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। যাতে তাদের মনোবল অটুট থাকে ও তাদের প্রতিবেশীদের পরামর্শও প্রদান করেছেন যে, তারা যেন আক্রান্ত রোগীদের ও তাদের পরিবারের কারও সাথে বিরুপ বা খারাপ আচরণ না করে এবং আতংকিত না হয়ে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও তার নির্দেশনায় জেলা প্রশাসনের ১৪ টি মোবাইল টিম জেলায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণা, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা, জনসমাগম এড়ানো, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, দেশের বাইরে ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগতদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ সহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
এই মানুষটি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ও তার পরিবারের কথা না ভেবে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের জন্য। শুধু তিনিই নন সাথে তার নির্দেশনায় জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ জেলার বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ তাদের নিজের জীবনের কথা ও পরিবারের কথা না ভেবে একই ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
এইসব কাজসহ নানান কাজ করার জন্য প্রশাসনকে অনেক কিছুর সম্মুখীনও হতে হয়েছে। তার পরেও এমনিভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষকে ভালোবেসে, ঠাকুরগাঁওবাসীর মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তারা। যেমনটা ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলেন তেমনি বর্তমান জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম তিনিও ঠাকুরগাঁওবাসীর সুখে-দুঃখে, সময় ও অসময়ে পাশে আছেন।
অনেকেই মন্তব্য করতে পারেন যে, তার দায়িত্ব তিনি পালন করছেন। হ্যাঁ তার দায়িত্ব তিনি বা তারা পালন করছেন ঠিকি। কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিক যারা আছি আমাদেরও তো দেশের মানুষের জন্য বা দেশের জন্য কিছু করার দায়িত্ব আছে। আমরা কি ঠিক মতো আমাদের সেই দায়িত্ব গুলো পালন করছি কি? আমরা কি আমাদের নিজের জীবনের, নিজের পরিবারের সুরক্ষার দায়িত্ব টুকুই কি ঠিক মতো পালন করতে পারছি? আমরা কি শুধু হাট বাজার, দোকান-পাট ও শপিংমল গুলোতে জমায়েত করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পেরেছি?
শুধু বাংলাদেশ সরকার বা সরকার প্রধান, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিক, গণমাধ্যমকর্মী, মিডিয়াকর্মীসহ বিভিন্ন দলীয় নেতাকর্মীদের দোষারোপ করি বা দোষত্রæটি দিয়ে থাকি। কিন্তু নিজের দোষ ত্রæটি গুলোর দিকে কে কতোটা দৃষ্টি দিয়েছি আমরা বা তা সংশোধন করার চেষ্টা করছি?
আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ স্থান থেকে নিজেরা সচেতন না হলে সরকারের বা প্রশাসনের একার পক্ষে কখনোই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা বা ঠিক করা সম্ভব না।
Leave a Reply